Skip to main content

মাইন বিস্ফোরণে আহত বিজিবি সদস্য নায়েক আক্তার হোসেনের মৃত্যু

 বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)-এর একজন দক্ষ ও সাহসী সদস্য নায়েক মোঃ আক্তার হোসেন আর নেই। (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। রামু ব্যাটালিয়নের (৬২১১৬) সদস্য নায়েক মোঃ আক্তার হোসেন কক্সবাজার ব্যাটালিয়ন (৩৪ বিজিবি)-এর অধীনস্থ রেজুআমতলী বিওপিতে অস্থায়ী সংযুক্ত দায়িত্বে কর্মরত ছিলেন। গত ১২ অক্টোবর ২০২৫ তারিখে আনুমানিক সকাল ১০:৫০ ঘটিকায় রেজুআমতলী বিওপির প্রস্তাবিত টিওবি পেয়ারাবুনিয়া এলাকায় টহলরত অবস্থায় মাইন বিস্ফোরণে গুরুতর আহত হন। বিস্ফোরণে তার দুই পায়ে মারাত্মক আঘাতপ্রাপ্ত হলে তাৎক্ষণিকভাবে তাকে সিএমএইচ, রামু সেনানিবাসে ভর্তি করা হয়। পরবর্তীতে উন্নত চিকিৎসার জন্য ১৩ অক্টোবর ২০২৫ তারিখে তাকে সিএমএইচ, ঢাকা-তে স্থানান্তর করা হয়। দীর্ঘ ১৯ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর আজ ৩১ অক্টোবর ২০২৫, সকাল ১১:১০ ঘটিকায় নায়েক মোঃ আক্তার হোসেন হার্ট অ্যাটাক করেন। কর্তব্যরত চিকিৎসক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাদাত বিন সিরাজের (ইন্টেনসিভিস্ট বিশেষজ্ঞ) তত্ত্বাবধানে টানা ৪৫ মিনিট CPR প্রদানের পরও তার হৃদস্পন্দন ফেরেনি। পরবর্তীতে ১২:১৫ ঘটিকায় চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। জাতির সীমান...

বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমানের ৫৪তম শাহাদাতবার্ষিকী আজ: স্মরণে এক অমলিন দেশপ্রেমের গাথা

 তারিখ: ২৮ অক্টোবর, ২০২৫

আজ ২৮ অক্টোবর, বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী মোহাম্মদ হামিদুর রহমানের ৫৪তম শাহাদাতবার্ষিকী। ১৯৭১ সালের এই দিনে সিলেটের ধলই সীমান্তে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে এক বীরোচিত যুদ্ধে নিজের জীবন বিলিয়ে দিয়ে তিনি যে ইতিহাস রচনা করেছিলেন, জাতি আজ গভীর শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় সেই অমর শহীদকে স্মরণ করছে।

যেভাবে যুদ্ধে গেলেন এক কিশোর:

মহেশপুরের খোর্দ খালিশপুর গ্রামের দরিদ্র কৃষক পরিবারে ১৯৫৩ সালের ২ ফেব্রুয়ারি জন্ম নেন হামিদুর রহমান। সাত ভাইবোনের সংসারে বড় হওয়ায় দায়িত্ব নেওয়া ছিল তাঁর নিত্যদিনের সঙ্গী। আর্থিক অনটনের মধ্যেই পিতার ইচ্ছায় মুজাহিদ বাহিনীতে যোগ দেন। তবে যশোরের চৌগাছায় ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের এক মহড়া দেখে তাঁর মনে জন্ম নেয় সেনাবাহিনীর প্রতি আকর্ষণ। ১৯৭১ সালের জানুয়ারিতে ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের রিক্রুটিং টিম তাঁকে বেছে নেয়।

প্রশিক্ষণকালেই যেভাবে শুরু হয় যুদ্ধ:

২ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রামের ইবিআরসিতে প্রশিক্ষণ শুরু করলেও ২৫ মার্চের নির্মম হত্যাযজ্ঞের মধ্য দিয়ে তাঁর জীবনে আসে আমূল পরিবর্তন। পাকিস্তানি সৈন্যদের গোলাগুলি থেকে অল্পের জন্য বেঁচে যাওয়া হামিদুর পালিয়ে প্রথমে নিজ গ্রামে, তারপর যশোরের চৌগাছায় অবস্থানরত ১ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে গিয়ে যোগ দেন মুক্তিযুদ্ধে। তাঁর সৈনিক নম্বর দেওয়া হয় ৩৯৪৩০১৪। সাহস ও বুদ্ধিমত্তায় তিনি কোম্পানি কমান্ডারের রানারের দায়িত্ব পান।

মরণঘাতী ধলই যুদ্ধ ও এক বীরের আত্মদান:

মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গলের ধলই সীমান্ত ফাঁড়ি (বিওপি) ছিল এক দুর্ভেদ্য ঘাঁটি। ২৮ অক্টোবর ভোররাতে 'সি' কোম্পানির আক্রমণে শুরু হয় ঐতিহাসিক ধলই যুদ্ধ। শত্রুর এলএমজির অবিরাম গুলিতে যখন মুক্তিযোদ্ধাদের অগ্রযাত্রা স্তব্ধ হ


ওয়ার উপক্রম, তখন কোম্পানি কমান্ডার ক্যাপ্টেন কাইয়ুমের নির্দেশ পেয়ে এগিয়ে যান হামিদুর।

ক্রলিং করে শত্রুর এলএমজি পোস্টের কাছে পৌঁছে তিনি দু'জন পাকিস্তানি সৈন্যের সাথে মল্লযুদ্ধে লিপ্ত হন। তাদের ঘায়েল করার পরও গুরুতর আহত অবস্থায় শত্রুর এলএমজি বাংকারে গ্রেনেড ছুঁড়ে তা নিষ্ক্রিয় করেন। এই সুযোগে মুক্তিযোদ্ধারা ঝাঁপিয়ে পড়ে শত্রু ঘাঁটিতে। সেদিন হামিদুরের মৃতদেহ পাওয়া যায় দু'জন শত্রুসৈন্যের লাশের পাশে। তাঁর এই আত্মত্যাগের বদৌলতেই ৭ দিনের সশস্ত্র লড়াইয়ের পর ৩ নভেম্বর মুক্তিযোদ্ধাদের দখলে আসে ধলই বিওপি।


মৃত্যুর পরও যাঁর যাত্রা শেষ হয়নি:

সেদিন সহযোদ্ধারা ভারতের আম্বাসা গ্রামে দাফন করেছিলেন এই বীর সন্তানকে। ২০০৭ সালের ১০ ডিসেম্বর, দীর্ঘ ৩৬ বছর পর, তাঁর দেহাবশেষ বাংলাদেশে ফিরিয়ে এনে পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় পুনরায় দাফন করা হয়। বাংলাদেশ সরকার মুক্তিযুদ্ধে তাঁর অসামান্য অবদানের জন্য তাঁকে ভূষিত করে সর্বোচ্চ খেতাব 'বীরশ্রেষ্ঠ'য়ে।

চিরন্তন প্রেরণা:

দেশের জন্য নিঃস্বার্থ আত্মত্যাগের যে উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত রেখে গেছেন বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান, তা চিরকাল বাংলার মাটি ও মানুষের হৃদয়ে প্রেরণার উৎস হয়ে জাগরূক থাকবে।

Comments

Popular posts from this blog

যশোরে বিজিবির অভিযানে স্বর্ণের বারসহ পাচারকারী আটক

বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) যশোর ব্যাটালিয়ন (৪৯ বিজিবি) এর আভিযানিক দল বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে ৪টি স্বর্ণের বারসহ এক পাচারকারীকে আটক করেছে। বৃহস্পতিবার কোতোয়ালী থানাধীন খুলনা-যশোর মহাসড়কের রাজারহাট বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এ অভিযান চালানো হয়। এ সময় পাচারকারীর কাছ থেকে ৪টি স্বর্ণের বার উদ্ধার করা হয়, যার মোট ওজন ৪৬৬.৪৬ গ্রাম। বিজিবি জানায়, আটককৃত স্বর্ণ ও পাচারকারীকে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

বিজিবি এর অভিযানে অস্র এবং গুলি উদ্ধার

বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের উখিয়া ব্যাটালিয়ন (৬৪ বিজিবি) এর অধীনস্থ হ্নীলা বিওপির দায়িত্বপূর্ণ খরেরদ্বীপ এলাকায় নদীপথে একটি বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে ০২টি G-3 রাইফেল, ০১টি MA-1 রাইফেল, ০১টি LM-16 রাইফেল, ০৮টি ম্যাগাজিন এবং ৫০৭ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়েছে।

রামু ৩০ বিজিবির অভিযানে ২০ হাজার ইয়াবাসহ সিএনজি চালক আটক

 কক্সবাজার, ৪ অক্টোবর ২০২৫ (শনিবার): রামু ব্যাটালিয়ন (৩০ বিজিবি) এর অধীনস্থ মরিচ্যা যৌথ চেকপোস্টের একটি টহলদল সফল অভিযান পরিচালনা করে বিপুল পরিমাণ মাদকদ্রব্যসহ একজনকে আটক করেছে। বিজিবির এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, আজ সকালে টহলদল পালংখালী থেকে কক্সবাজারগামী একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশাকে তল্লাশির জন্য থামায়। পরবর্তীতে সিএনজির চালকের ছিটের নীচে বিশেষভাবে লুকানো অবস্থায় ২০,০০০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করা হয়। ঘটনাস্থলেই সিএনজির চালককে আটক করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। বিজিবির কর্মকর্তারা জানান, সীমান্ত এলাকায় মাদক চোরাচালান রোধে রামু ব্যাটালিয়নের টহল কার্যক্রম আরও জোরদার করা হয়েছে এবং এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।